39%
ছাড়বিস্তারিত
প্রেম মানে না কোনো বাধা। হৃদয়ের সঙ্গে হৃদয় মিলে গেলে, তাকে আর কেউ পারে না আলাদা করতে। এ সম্পর্কে পারস্পরিক ভুল বোঝাবুঝি থাকে, অবিশ্বাস থাকে, নিত্যদিনের টানাপোড়েন থাকে। হৃদয়ঘরে থাকে বেদনার আহাজারি। অবিশ্বাসের খুনসুটি। সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের 'কপালকুণ্ডলা' তেমনি এক উপন্যাস। বাংলা সাহিত্যের অসাধারণ এক সংযোজন 'কপালকুণ্ডলা'। জীবনের সুখ-দুঃখ দু'য়ের সামঞ্জস্যে জীবনবাস্তবতার রূপ ও কল্পনার আদর্শ পরস্পরকে আলিঙ্গন করে রচনা করেছেন এক অনবদ্য উপন্যাস। কারও কারও মতে, বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক রোমান্টিক উপন্যাস এটি। কাহিনি পড়ে নিজেকে কখনও নবকুমার মনে হয়েছে। 'পথিক তুমি পথ হারাইয়াছ' ডায়ালগ দিয়ে পরিচয় হয় নবকুমারের সঙ্গে কপালকুণ্ডলার। নবকুমার বিয়ে করেন পদ্মাবতীকে। পদ্মাবতীর পরিবার ধর্মান্তরিত হলে তাকে মেনে নেয় না নবকুমারের পরিবার। পুরো উপন্যাসটি প্রেমময় হলেও, এখানে কোনো অশ্নীল বা সস্তা ডায়ালগে ভরে রাখা হয়নি। জীবন্ত কথামালা আর হৃদয়ছোঁয়া বাক্য গাঁথুনি দিয়ে সাজানো হয়েছে এ উপন্যাস। কাপালিক নামে এক তান্ত্রিকের আশ্রয়ে কপালকুণ্ডলা বড় হন। হয়ে ওঠেন বনদেবী। সেই দেবীর প্রেমে পড়েন নবকুমার। তাঁকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। নিয়ে আসেন নিজ গ্রামে। নিজে অভাব-অনটনে থাকলেও, কপালকুণ্ডলাকে তা রাখতে চাননি। ভালোবাসার প্রতিদান হিসেবে নবকুমার পুরো জীবন-যৌবন দিয়ে কপালকুণ্ডলাকে সুখী করতে চেয়েছেন। পদ্মাবতী যখন তাঁর গ্রামে ফিরে আসেন, তাঁর সঙ্গে থাকার প্রস্তাব দেন, নবকুমার তা প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি ভালোবেসে কপালকুণ্ডলাকে ডাকতেন মৃণ্ময়ী বলে। গভীর এই ভালোবাসার মাঝেও হানা দেয় ভয়ংকর সন্দেহ। নবকুমার রক্ত-মাংসে গড়া মানুষ। তাঁর মধ্যেও তাই অবিশ্বাসের হানা দেওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। একসময় যে কপালকুণ্ডলা তাঁকে প্রাণ বাঁচাতে এগিয়ে আসেন, তাঁকে মেরে ফেলার জন্য নবকুমার এগিয়ে যান। তিনি ভুল বুঝতে পারেন। গল্পের কাহিনি বর্তমান প্রজন্মের প্রেম-ভালোবাসার মতো না হলেও প্রণয়ের সুতা যে কালের আবর্তে একই সূত্রে গাঁথা। ভালোবাসা অমর। জীবনব্যস্ততায় আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নিজেদের খুনসুটি নেই। কিন্তু এর মাঝেও রয়েছে নানা রকম ভালোবাসার গল্প। হৃদয়ের ভেতরে জাগিয়ে তুলবে। প্রেমের জলে রোমান্টিকতায় ভাসতে ভাসতে জলের ভেতর ডুবে যাওয়ার গল্প। জীবনবোধে এক আশ্চর্য ঘটনার আড়ালের ঘটনা। শেষে নবকুমার বাঁচাতে চেয়েছিলেন কপালকুণ্ডলাকে। তাঁকে গৃহে ফেরত নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি পারেননি। গৃহে নিতে না পারলেও পেরেছেন তঁপার হৃদয়ে।
Reviews (0)
Get specific details about this product from customers who own it.
This product has no reviews yet. Be the first one to write a review.