30%
ছাড়বিস্তারিত
রাতের বেলা হঠাৎ করেই মনির উদ্দিনের ঘুম ভেঙ্গে যায়। সে ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে আসে অন্ধকারে। সেই সময় তাকে সাপে কাটে। সাপে কাটার পরই সে তার পায়ে দড়ি দিয়ে দুটি বাধ দেয়। ভোরের আজানের সময় সে তার ১৭ বছের শরিফাকে জানায় সাপে কাটার কথা। শরিফা দিকবিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে দৌড়ে ছুটে যায় মনিরের বন্ধু জলিলকে খবর দিতে। খবর পেয়েই জলিল রওনা হয়ে যায় ধূপখালির দিকে ওঝা আনতে।
জলিল নিবারণ ওঝাকে নিয়ে ফিরে আসে গ্রামে। শুরু হয় মনিরের বিষ নামানোর চেষ্টা। ঝারফুক আর নানান অচার চলে, কিন্তু রোগীর কোন উন্নতি দেখা যায় না।মনিরের গ্রামের নাম বানিয়াবাড়ি। এটি ময়মনসিংহের দিকে একটি হাওর এলাকা। বছরে একটি ফসল হয়, তারপরেই আসে বর্ষা। তখন তারা আনন্দে দিন কাটায়। কিন্তু যদি কোন বছর ভাল ফসল না হয়, খরা হয়, বা আগাম বর্ষায় ফসল নষ্ট হয় তখনই সেখানে দেখা দেয় অভাব অনটন। মনির যখন ছোট তখন পরাপর দুবছর তেমনি ফসল নষ্ট হয়ে যায়। পিতৃমাতৃহীন মনির তখন থাকতো তার মামীর সাথে। অভাব অনটনে তার মামার মাথা খারাপ হয়ে মারা যায়। তারপর অভাবের তারনায় তার মামী বিপথে পা বাড়াতে বাধ্য হয়। গ্রামের মাতব্বররা মামীকে গ্রাম থেকে তারিয়ে দেয়। মামী বাধ্য হয়ে মনিরকে একা রেখে গ্রাম ছেড়ে চলে যায়।মনিরকে সে রেখে যায় বজলু সরকারের বাড়িতে। মনির সেখানে কাজ করে আর টাকা জমায়। কিছু টাকা জমলে পরে সে বজলু সরকারকে বলে একটা জায়গা কিনতে চায়। বজলু সাহেব তাকে একটি যায়গা দিয়ে দেন। সেখানে সে বাড়ি করে, পরে সেই বাড়ি টিন দিয়ে করে। ইট দিয়ে উঠান বানায়। এসব দেখে এক দিন বজলু সাহেব মনিরকে বিয়ে করিয়ে দেন পাশের গ্রামের এক মেয়ের সাথে। দরিদ্র পরিবারর ৫ সন্তানের মধ্যে মনিরের বৌ সবার বড়।মনিরকে যখন সাপে কাটলো সেটা ধান কাটার সময়। সেদিনই ধান কাটা শুরু হয়েছে। কিন্তু ভাগ্য খারাপ কারণ আকাশে বিশাল মেঘের আনাগোনা শুরু হয়েছে। যে কোন সময় ঢল নামবে। গ্রামের সমস্ত পুরুষ মানুষ চলে গেছে ধান কাটতে। মনির আর জলিল বজলু সরকারের ক্ষেতে ধান কাটে। জলিলকে ডেকে বজলু সরকার বলেন ধানকাটা বাদ দিয়ে গরুর গাড়ি জোগাড় করে মনিরকে নিয়ে গঞ্জে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে। সন্ধ্যার পরে জলিল আর গ্রামের ইমাম সাহেব মনিরকে গরুর গাড়িতে করে গঞ্জের দিকে রওনা হয়।
Reviews (0)
Get specific details about this product from customers who own it.
This product has no reviews yet. Be the first one to write a review.